কাজিপুরে বন্যার পানিতে ডুবেছে কৃষকের স্বপ্ন

    কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি.

    অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় পানি বেড়ে কাজিপুর পয়েন্টে বিপদ সীমার ২৫ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রবিবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এতে করে প্রায় দুই হাজার হেক্টর আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

    পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এরই মধ্যে চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া, মনসুরনগর, চরগিরিশ, নিশ্চিন্তপুর, খাসরাজবাড়ী ও তেকানীসহ গান্ধাইল, শুভগাছা ও মাইজবাড়ি ইউনিয়নের কিছু অংশের রোপা আমনের ক্ষেতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এতে করে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দ্রুত এই পানি নেমে না গেলে সমূহ ক্ষতির মুখে পড়বেন কৃষকেরা। গত কয়েক বছর বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এই কৃষকেরা এবার আশায় বুক বেঁধেছিলেন। ইতোমধ্যে আমন ধানের রোপিত চারা অনেকটাই সবুজ হয়ে উঠেছিল। মনসুর নগর ইউনিয়নের কৃষক খোকা মিয়া জানান, গতবারও বন্যার কারণে ভালো ফলন পাইনি। এবারও জমিতে পানি ঢুকেছে। আল­াই জানে কি হবে! মাইজবাড়ির কৃষক আক্তার বলেন, চড়া দামে শ্রমিক নিয়ে ধানের চারা রোপণ করেছিলাম। গাছ বেশ সবুজ হয়েছে। প্রথমবারের সারও ছিটিয়েছি। কিন্তু কয়েকদিন হলো ধান পানিতে ডুবে গেছে। দ্রুত পানি না কমলে অনেক ক্ষতি হবে।

    কাজিপুর উপজেল কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুর পর্যন্ত চরাঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়ন সহ গান্ধাইল ও মাইজবাড়ির আংশিক ফসলি জমিতে পানি ঢুকেছে। এতে প্রায় ২০ হাজার কৃষকের মোট ১৮ শ ৭৭ হেক্টর রোপা আমনের ফসল নিমজ্জিত হয়েছে।

    কাজিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেজাউল করিম ধুনট বার্তাকে জানান, দ্রুত এই পানি নেমে গেলে কৃষকের তেমন কোন ক্ষতি হবে না। যদি দীর্ঘকাল ব্যাপী পানি থাকে তবে এবারও ক্ষতির সম্মুখীন হবেন চরাঞ্চলের রোপা আমন চাষীরা। এদিকে বানভাসি মানুষদের জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ সহায়তা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

    কাজিপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একেএম শাহা আলম মোল্লা ধুনট বার্তাকে জানান, চরাঞ্চলের বানভাসিদের জন্য ৬ মেট্রিকটন চাল ও প্রতি ইউনিয়নের জন্য ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে এগুলো বিতরণও শুরু হয়েছে।

    কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী ধুনট বার্তাকে জানান, বানভাসিদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি। আমরা সার্বক্ষণিক তাদের পাশে আছি।

    অনুমতি ব্যতিত কপি করা থেকে বিরত থাকুন। -ধুনট বার্তা কর্তৃপক্ষ